একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে কি কি প্রয়োজন?

কিভাবে একটি ওয়েবসাইট শুরু করবেন? একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে কি কি প্রয়োজন?

আজকের যুগে ব্যবসা, ব্যক্তিগত ব্র্যান্ডিং বা যোগাযোগের জন্য ওয়েবসাইট অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। ওয়েবসাইট থাকলে ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিশ্বের যে কোনো প্রান্তে ব্যবসা কিংবা সার্ভিসের পরিচিতি ছড়িয়ে দেওয়া যায়। তবে অনেকেরই ধারণা নেই যে, একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে কী কী প্রয়োজন। এই আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করবো, একটি পূর্ণাঙ্গ ওয়েবসাইট তৈরি করতে কি কি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় প্রয়োজন।

একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে যা যা প্রয়োজন

#০১. ডোমেইন নাম নির্বাচন:

একটি ওয়েবসাইটের সর্ব প্রথম এবং গুরুত্বপূর্ন অংশ হলো ডোমেইন নাম। ডোমেইন হচ্ছে  একটি ওয়েবসাইটের ঠিকানা, যেমনঃ webhostbd.com। কোনো ওয়েবসাইটে প্রবেশের জন্য আমার কম্পিউটার বা মোবাইলের ব্রাউজারে যে এড্রেস বা নাম টি লিখে থাকি তাই ডোমেইন। ডোমেইন নাম এমন হতে হবে যা ব্যবসার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং সহজে মনে রাখা যায়।

ডোমেইন নাম নির্বাচন করার সময় আপনাকে নিম্নলিখিত বিষয়গুলো মাথায় রাখতে হবে:

  • সহজ এবং সংক্ষিপ্ত: ডোমেইন নেম সিলেক্ট করার আগে খেয়াল রাখতে হবে যাতে ডোমেইনটি ছোট এবং অর্থবোধক হয়।
  • ব্যবসার বা সেবার নাম: আপনার ব্যবসার বা সেবার নাম ডোমেইনের অংশ হলে সেটি গ্রাহকদের জন্য বুঝতে সহজ হবে।
  • TLD (Top Level Domain) নির্বাচন করুন:  বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের ডোমেইন এক্সটেইনশন পাওয়া যায় যেমন .com, .net, .org ইত্যাদি। তবে এসব এক্সটেইনশন এর মধ্যে ‘.com’ সবচেয়ে জনপ্রিয়।

#০২. ওয়েব হোস্টিং সেবা:

ডোমেইন নামের পর, ওয়েবসাইটের ডেটা সংরক্ষণ (ছবি ইমেজ এবং টেক্সট) ও ব্যবস্থাপনার জন্য একটি নির্ভরযোগ্য হোস্টিং সেবা প্রয়োজন। দেশে এবং দেশের বাইরে বিভিন্ন কোম্পানী ওয়েব হোস্টিং সেবা দিয়ে থাকে। তবে কম খরচে এবং নির্ভরযোগ্য ওয়েব হোস্টিং সেবার জন্য আপনি ওয়েব হোস্ট বিডি থেকে হোস্টিং সার্ভিস নিতে পারেন। ওয়েব হোস্ট বিডির হোস্টিং সার্ভিস সম্পর্কে জানতে এই লিংকে ক্লিক করুন।

ওয়েব হোস্টিং সেবার কিছু ধরন তুলে ধরা হলো:

  • শেয়ার্ড হোস্টিং: অন্য যেকোনো ওয়েব হোস্টিং এর থেকে শেয়ার্ড হোস্টিং তুলনামূলকভাবে সস্তা এবং ছোট ওয়েবসাইটের জন্য শেয়ার্ড হোস্টিং উপযুক্ত।
  • VPS (Virtual Private Server) হোস্টিং: VPS হোস্টিং শেয়ার্ড হোস্টিং এর থেকে তুলনামূলক দ্রুত সেবা প্রদান  এবং এখানে ফিচার ও কাস্টমাইজেশন এর ক্ষেত্রে বেশি সুবিধা পাওয়া যায়।
  • ডেডিকেটেড হোস্টিং: ডেডিকেটেড হোস্টিং এর ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ সার্ভার এককভাবে একজন ইউজারের ওয়েবসাইটের জন্য ব্যবহৃত হয়। এ ধরনের হোস্টিং সার্ভিস সাধারনত বড় ট্রাফিক যুক্ত ওয়েবসাইটের জন্য ব্যাবহার করা হয়।

#০৩. ওয়েবসাইট ডিজাইন ডেভেলপমেন্ট:

একটি ওয়েবসাইট তৈরির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো এর ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্ট। ওয়েবসাইটের ডিজাইন দেখতে সুন্দর ও প্রফেশনাল হওয়া অত্যাবশক।

চলুন জেনে নেই ওয়েবসাইট ডিজাইন ও ডেভলপমেন্ট করার জন্য কি কি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে

  • UI (User Interface): ইউ আই বা ইউজার ইন্টারফেস হলো একটি ওয়েবসাইটের ভিজ্যুয়াল ডিজাইন বা লেআউট। এই সেকশনে আকর্ষণীয় রং, ফন্ট, ছবি ও লোগো ব্যবহার করে ওয়েবসাইটকে আকর্ষণীয় করে তোলা যায়।
  • UX (User Experience): ইউ এক্স বা ইউজার এক্সপেরিয়েন্সের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো ওয়েবসাইটের সহজ নেভিগেশন। যাতে একজন ব্যবহারকারী সহজেই ওয়েবসাইট থেকে তথ্য খুঁজে পান এবং স্বাচ্ছন্দ্যে সাইট টি ভিজিট করতে পারেন।
  • রেসপন্সিভ ডিজাইন: ওয়েবসাইট ডিজাইনের ক্ষেত্রে অন্যতম গুরুত্বপূর্ন একটি বিষয় হলো সাইটের রেসপন্সিভনেস। আমরা মোবাইল, ট্যাব, ল্যাপটপ, ডেক্সটপ সহ বিভিন্ন ডিভাইস থেকে ওয়েবসাইট ভিজিট করে থাকি। যেহেতু এই ডিভাইস গুলোর স্ক্রিন সাইজ একেক রকম তাই ওয়েবসাইট তৈরির সময় সব ডিভাইসে যেনো ওয়েবসাইট টি সঠিক ভাবে দেখা যায় তার ব্যাবস্থা ওয়েবসাইট তৈরির সময় ই নিতে হবে।
  • ডেভেলপমেন্ট: ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্টের জন্য কোডিং দক্ষতা প্রয়োজন। HTML, CSS, JavaScript ইত্যাদি ভাষা ব্যাবহার করে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করা হয়। তবে বর্তমান সময়ে অনেকেই জনপ্রিয় এবং বহুল ব্যাবহৃত Content Management System (CMS) WordPress এর মাধ্যমে ওয়েবসাইট তৈরি করে থাকেন, যেখানে কোডিংয়ের প্রয়োজন কম।

ওয়েব হোস্ট বিডি তে রয়েছে ওয়েবসাইট ডিজাইন এবং ডেভলপমেন্টের জন্য ইন হাউজ দক্ষ টিম। আপনি আপনার বাজেটের মধ্যে এবং সর্বনিম্ন খরচে ওয়েব হোস্ট বিডি থেকে আপনার ব্যাক্তিগত বা কোম্পানীর জন্য প্রয়োজনীয় ওয়েবসাইট টি তৈরি করে নিতে পারেন। বিস্তারিত জানতে এই লিংক টি ভিজিট করুন

#০৪. কন্টেন্ট ম্যানেজমেন্ট এসইও:

একটি ওয়েবসাইটের ডিজাইন এবং ডেভেলপমেন্ট পার্টের কাজ শেষ হওয়া মানেই সব কাজ শেষ হয়ে যাওয়াকে বুঝায় না। কারন ওয়েবসাইটের কার্যকারিতা বাড়াতে নিয়মিত কন্টেন্ট আপডেট এবং সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (SEO) নিয়ে কাজ করা গুরুত্বপূর্ণ।

  • কন্টেন্ট তৈরি: ওয়েবসাইট ডিজাইন এবং ডেভেলপমেন্ট কাজ শেষহওয়ার পর একজন সাইট ওনারকে তার ব্যাবসার মূল লক্ষ্য অনুযায়ী কন্টেন্ট তৈরি করতে হবে। যেমন প্রোডাক্ট বা সার্ভিস সম্পর্কে ব্লগ পোস্ট, প্রোডাক্ট ডেসক্রিপশন, সার্ভিস সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য এড করা এবং আপডেট করা।
  • এসইও (সার্চ ইন্জিন অপটিমাইজেশন): এসইও সার্চ ইন্জিন অপটিমাইজেশন এর মাধ্যমে ওয়েবসাইট কে বিভিন্ন জনপ্রিয় সার্চ ইন্জিন যেমন গুগল বিং এর সার্চ রেজাল্টের শুরুতে নিয়ে আসা সম্ভবত যার মাধ্যমে ব্যাবসার প্রচার এবং ওয়েবসাইটের ভিজিটর বাড়ানো সম্ভব। সার্চ ইন্জিন অপটিমাইজেশন এর গুরুত্বপূর্ন কাজের মধ্যে রয়েছে কিওয়ার্ড রিসার্চ, মেটা ডেসক্রিপশন, টাইটেল অপটিমাইজেশন, লিংক বিল্ডিং ইত্যাদি।

#০৫. সিকিউরিটি সেটআপ:

আমরা জানি স্বাধীনতা অর্জনের থেকে স্বাধীনতা রক্ষা করা কঠিন ঠিক তেমনি ওয়েবসাইট তৈরির থেকেও এর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা অত্যন্ জরুরী এবং গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য SSL সার্টিফিকেট একটিভ আছে কিনা তা খেয়াল রাখতে হবে, SSL সার্টিফিকেট ওয়েবসাইটের ডেটা এনক্রিপ্ট করে এবং গ্রাহকদের কাছে আস্থাশীলতা বাড়ায়। এছাড়াও ফায়ারওয়াল সহ থিম প্লাগিন এবং অন্যন্ন ফিচার সমূহ নিয়মিত আপডেটের ব্যবস্থা রাখতে হবে।

#০৬. ওয়েবসাইটের নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ:

ওয়েবসাইট তৈরি করার পর এটি রেগুলার আপডেট এবং রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজন হয়। রক্ষণাবেক্ষণ এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ন বিষয়গুলো হলো নিয়মিত ডেটা ব্যাকআপ নেওয়া, ওয়েবসাইটের পেজ লোড টাইম চেক করা ইত্যাদি।

একটি সফল ও কার্যকরী ওয়েবসাইট তৈরি করতে আপনাকে এই বিষয় গুলো বিবেচনায় রাখতে হবে। ডোমেইন নাম নির্বাচন থেকে শুরু করে, হোস্টিং, ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্ট, কন্টেন্ট ম্যানেজমেন্ট এবং সিকিউরিটি—সবই সমান গুরুত্বপূর্ণ। ওয়েব হোস্ট বিডি থেকে আপনি সেরা হোস্টিং সেবা এবং ওয়েবসাইট রক্ষণাবেক্ষণের সমস্ত সুবিধা পাবেন, যা আপনার অনলাইন প্রেজেন্সকে আরো শক্তিশালী করতে সাহায্য করবে।

Leave a Reply

4 + 14 =

× WhatsApp Live Chat